বিরিয়ানি খেতে কে না ভালোবাসি আর তা যদি হয় হায়দ্রাবাদী চিকেন বিরিয়ানি তাহলে তো লোভ সামলানো দায়। কিন্তু সব জাগায় সঠিক স্বাদ ও সুবাস সব সময়ে পাওয়া যায় না। তাই এবার ঈদে একেবারে পারফেক্ট স্বাদ পেতে এই রেসিপি অনুসরন করুন।
বিরিয়ানি বা বিরানি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশে প্রচলিত এক বিশেষ প্রকারের খাবার যা সুগন্ধি চাল, ঘি, গরম মশলা এবং মাংস মিশিয়ে রান্না করা হয়। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের মাধ্যমে উৎপত্তি লাভ করে। এটি সাধারনত বিশেষ অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নে পরিবেশিত হয়।
বিরিয়ানি (بریانی) একটি উর্দু শব্দ, যা ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। ফারসি ভাষায় বিরিঞ্জ (ফার্সি: برنج) অর্থ চাল বা ভাত। অন্যমতে, ফারসি শব্দ বিরিয়ান (ফার্সি: بریان) থেকে এসেছে যারঅর্থ রোস্ট বা ভেজে নেওয়া অর্থাৎ মূলত রোস্ট করা মাংস ও ভাতের সহযোগে তৈরি বিশেষ সুুস্বাদু খাবারই বিরিয়ানি। এটি বিরানি, বেরিয়ানি, বিরিয়ান্নি ইত্যাদি নামেও পরিচিত। বিরিয়ানি রান্নার আগে সুগন্ধি চাল ঘি দিয়ে ভেজে নেওয়া হয়। তাই এই নামকরণ। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে যে “বিরন করা” শব্দটি ব্যবহৃত হয় সেটা এই ফারসি শব্দেরই পরিবর্তিত রূপ।
নামকরণ
” Bangla Recipe ” জন্য কারুকর্ম ব্লগে রেগুলার চোখ রাখুন
উপকরণ
মাংস রান্নার জন্য
- মুরগি – ১ কেজি (একটু বড় করে টুকরা করা)
- আদা বাটা – ১ চা চামচ
- রসুন বাটা – ১ চা চামচ
- গরম মসলা গুড়া – 8 টেবিল চামচ
- শাহি জিরা – আধা চা চামচ
- জিরা ভাজা গুঁড়া – ১ চা চামচ
- জয়ফল-জয়ত্রী ভেজে গুড়া – ১ চা চামচ
- পেঁয়াজ কুচি – ১ কাপ
- লেবুর রস – ২ টেবিল চামচ
- টক দই – ৩ কাপ
- দুধ – ১ লিটার
- তেল/ঘি – ৩/৪ কাপ
- লবণ – প্রয়োজন মত
বিরিয়ানির ভাত রান্নার জন্য
- বাসমতী চাল – আধা কেজি
- তেজপাতা – ২ টি
- এলাচ – ৫ টি
- দারুচিনি – ২ টুকরা
- লবণ – ১ টেবিল চামচ
বিরিয়ানি দমে বসানোর জন্য
- ময়দা – ১ কাপ
- গরম পানি – প্রয়োজন মত
- ঘি – ২ টেবিল চামচ
- ধনে পাতা কুচি – ১ কাপ
- কাঁচা মরিচ কুচি – ইচ্ছে মত
- কেওড়া জল – ১ চা চামচ
- গোলাপ জল – ১ চা চামচ
- পেঁয়াজ বেরেস্তা – ১ কাপ
- কাজুবাদাম – ৮-১০ টি
- পেস্তাবাদাম – ৮-১০ টি
- কিসমিস – আধা কাপ
- জাফরান – সামান্য
প্রনালি
- ময়দায় গরম পানি দিয়ে রুটির কাই তৈরী করে রাখুন।
- জাফরান দুধে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
- ২ রকমের বাদাম তেল এর মধ্যে হালকা ভেজে নিন।
- চাল ১ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন।
- একটি বড় হাড়িতে গরম পানিতে ভাত রান্নার উপকরণ (চাল বাদে) দিয়ে দিন। পানি ভাল মত ফুটে উঠলে চাল ঢেলে দিন।
- চাল আধাসেদ্ধ হয়ে গেলে গেলে চালনির নিচে কোনো বড় পাত্র দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে, যাতে কিছু মাড় অবশিষ্ট থাকে।
- মুরগী পছন্দমত টুকরো করে টকদই ও ১ চা চামচ লবণ দিয়ে ১ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন।
- তার পর মাংসের সব মশলা দিয়ে ভালো করে কষানো হলে দুধ দিয়ে দমে বসান।
বিরিয়ানি প্রস্তুত প্রনালি
- এবার মাংসের হাড়িটি চুলার উপর অল্প আঁচে বসিয়ে মাংসের উপর পেঁয়াজ বেরেস্তা, পুদিনা, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ, বাদাম, কিসমিস সুন্দর করে ছড়িয়ে দিন ও আধা ফোটা চাল মাংসের উপর বিছিয়ে দিন।
- এবার চালের উপর ঘি, জাফরান ভিজানো দুধের ১ কাপ, ভাতের মার, কেওড়া জল, গোলাপ জল, ধনেপাতা কুচি ও একমুঠো বেরেস্তা ছড়িয়ে দিন।
- এবার কাই করা ময়দা দিয়ে পাত্রের চারপাশে ছড়িয়ে ভাল করে ঢেকে দিতে হবে। এ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার থাকলে ময়দার বদলে সেটা ব্যবহার করতে পারেন।
- এখন অল্প আঁচে ২৫-৩০ মিনিট দমে রান্না করুন। বিরিয়ানির সুগন্ধ বের হলে বুঝতে হবে রান্না হয়ে গিয়েছে।
- তোলার সময় পাত্রের সাইড থেকে চাল ও মাংস একসাথে তুলে সালাদ দিয়ে পরিবেশন করুন।
- এই বিরিয়ানি ওভেনেও করা যায়। সে ক্ষেত্রে ওভেন প্রুফ পাত্রে এ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার দিয়ে ভাল মত ঢেকে দিতে হবে।
- ১১০°তে পাত্রকে ৩০ মিনিটের মত (অথবা বিরিয়ানির সুগন্ধ বের হওয়া পর্যন্ত) কুক করতে হবে।
লিখছেন – সৈয়দা আনোয়ারা আমিন