অক্সিজেন তৈরি করার দুটি পদ্ধতির কথা আপাতত মনে পড়ছে ।
এক , হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড H2O2 এবং MnO2 বিক্রিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেন উৎপন্ন করা যেতে পারে। কিন্তু এটির ক্ষেত্রে ৩% হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করে সামান্য পরিমাণ অক্সিজেন উৎপন্ন করা সম্ভব । ৩০% হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দিয়ে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন তৈরি করা সম্ভব কিন্তু এই ঘনত্বের হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ত্বক ও চোখের পক্ষে ভয়ংকর ক্ষতিকর। তাই সেক্ষেত্রে এটি ঘরের কাজে ব্যবহার করা সম্ভব নয় আর চেষ্টাও করবেন না।
দুই , তড়িৎবিশ্লেষণের মাধ্যমে জলের বিশ্লেষণের দ্বারা হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপন্ন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে জলের মধ্যে স্বল্প পরিমাণে সোডিয়াম ক্লোরাইড লবণ বা সালফিউরিক অ্যাসিড যোগ করতে হয় । তবে অনেকক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণে এগুলো যোগ না করলে অক্সিজেনের পরিবর্তে ক্লোরিন বা সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। তাছাড়া হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের বন্ধন শক্তিশালী হওয়ায় এক্ষেত্রে ২২০ ভোল্টের পরিবর্তী প্রবাহের বিদ্যুৎ প্রয়োজনীয়।[1] তাই এটি ইলেকট্রিকের কাজ না জানা ব্যক্তির বাস্তবায়িত না করাই শ্রেয়। তাছাড়া উৎপাদিত হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন যদি মিশে যায় একে অপরের সাথে । তবে বড়ো বিস্ফোরণ হতে পারে ।
যেহেতু এই উপরোক্ত উপায়ে অক্সিজেন তৈরি ও সংগ্রহ একেবারেই অসম্ভব। তাই আমাদের হোয়াটস্যাপ ইউনিভার্সিটির কিছু বিদ্বান মানুষ অদ্ভুত অদ্ভুত গুজব রটাচ্ছে।
যেমন- একটু জোয়ান , ন্যাপথালিন বল , লবঙ্গ আর ইউক্যালিপটাস তেল এগুলো একটা পুঁটলিতে বেঁধে গন্ধ শুঁকলে নাকি দেহে অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যাবে।
যদি কেউ এমন তথ্য পেয়ে থাকেন। তবে জানবেন এটির কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। [2]
তবে এখন অনলাইনে এবং কিছু ওষুধের দোকানে পোর্টেবল অক্সিজেন ক্যানিস্টার পাওয়া যাচ্ছে। এটির ৬ লিটারের দাম প্রায় ৫০০-৭০০ টাকা ।
ডাক্তাররা অনেকসময় অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটার নেওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন। এটি ঘরে উপস্থিত অক্সিজেনকে সংগ্রহ করে তাকে পরিশুদ্ধ করে ৯০-৯৫% অক্সিজেন সরবরাহ করে ও নাইট্রোজেন ত্যাগ করে দেয়। এটির দাম অপেক্ষাকৃত বেশি ৫০,০০০ -এর উপরে এটির দাম।
লিখেছেন – সুকৃতি দাস