ডায়েটে অনেকেই শসা খেয়ে থাকেন। ডায়েটেশিয়ানরাও শসা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রচুর পানি থাকায় শসা খাওয়া সবার জন্যেই ভালো। তবে সারাদিন কিন্তু শসা খেয়ে থাকা ভালো নয়। অতিরিক্ত শসা খেলেও বিভিন্ন সমস্যায় পরতে হয়।
অনেকেই আছেন কোনো সবজি খেতে পারেন না বা খেতে চান না। কিন্তু যখন ওজন কমানোর বিষয় আসে তখন জোর করে হলেও শসা খেয়ে থাকেন। বিষয়টা সঠিক। শসা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে কারন শসায় রয়েছে খুব অল্প পরিমাণ ক্যালরি, শসাতে পানির পরিমাণও অনেক বেশি থাকে।
এছাড়াও শসাতে পটাসিয়াম ছাড়াও বেশ কিছু উপকারী মিনারেলস রয়েছে। কিন্তু শুধু শসা খেয়েই যদি আপনি ওজন কমাতে চান তবে একটা সময় পর আপনাকে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। শুধু শসা খেলে আপনার দৈনিক শারীরিক ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা ও অন্যান্য চাহিদা পূরণ হয় না।
শসা (Cucumis sativus) গোর্ড পরিবার কিউকারবিটাসের অন্তর্গত একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ। শসা এক প্রকারের ফল। লতানো উদ্ভিদে জন্মানো ফলটি লম্বাটে আকৃতির এবং প্রায় ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এর বাইরের রঙ সবুজ। তবে পাকলে হলুদ হয়। ভেতরে সাদাটে সবুজ রঙের হয়, এবং মধ্যভাগে বিচি থাকে।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রায় এক মাস ধরে ওজন কমাতে সারাক্ষণ শসা খেলেই ঘটবে নানা বিপত্তি। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শরীর ভীষণদুর্বল হয়ে যাবে। কাজ করার শক্তি পাবেন না। রক্ত কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
যার ফলে একটা সময় পর আপনাকে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে তা হলোঃ
- ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে যায়।
- ত্বকে বলিরেখা দেখা যায়।
- চুল ঝরে।
- হাত-পায়ে পানি চলে আসে।
- গ্যাস্ট্রিক ও আলসারের সমস্যা দেখা দেয়।
- অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যায়।
আরো পড়ুন
- ওয়ানডে ম্যাচের ইতিহাসে বাংলাদেশের সেঞ্চুরিয়ান প্রথম নারী ফারজানা
- দেশের প্রথম নারী প্যারা কমান্ডো জান্নাতুল ফেরদৌস
- কেন এখন বিয়ের উপহার (Marriage Gift) উপহার হিসেবে নগদ টাকাই বেশি প্রত্যাশিত !!
- স্বাস্থ্যকর নখ (Nails) বজায় রাখার টিপস
- লিপস্টিক এর আবিষ্কার
অতিরিক্ত শশা খেলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। শশাতে রয়েছে কিউকুরবিটাচিন ( Cucurbitacin)। তাই শশা বেশি খেলে শরীরে টক্সিন (Toxin) বেড়ে যায়।
শশাতে প্রচুর পানি রয়েছে। বেশি শশা খেলে শরীরে তরলের ভারসাম্যহীনতা হয়। ইউরিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায়।
যাদের এসিডিটি সমস্যা রয়েছে, তারা অতিরিক্ত শশা খেলে এসিডিটি বাড়ে। এ ছাড়া এসিডিটি না থাকলেও শশা বেশি খেলে পেট ফুলে যায়, পেটে ব্লোটিং হয়, গ্যাস হয়।
যাদের শ্বাসতন্ত্রে সমস্যা রয়েছে তারা শশা খেলে অনেক ক্ষতি হয়। শশাতে পটাশিয়াম বেশি থাকে। এটি কিডনির কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। দীর্ঘদিন অতিরিক্ত শশা খাওয়া কিডনির জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শশাতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। তাই অতিরিক্ত শশা খেলে কিডনির পাথর হওয়ার ঝুঁকি হতে পারে। শশা খেয়ে পেট ভরে গেলে ক্ষুধা কমে যায়। এতে অনান্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ কম হয়। তাই শশা খেলে ওজন কমলেও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। বেশি শশা খেলে অনেকের পায়ে পানি জমে।
এজন্যে পুষ্টিবিদরা সবসময় বলে থাকে শুধু শসা নয়, বরং সবধরনের সবজি দিয়েই আপনি আপনার ডায়েট করুন। শসা খাওয়ার উত্তম সময় হলো সকাল ১০টা থেকে ১১টা, দুপুরে খাবারের সাথে সালাদ হিসেবে খাওয়া।
যাদের শসা খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হয় তারা শসার ভিতরের বিচি ফেলে শসাটি খেতে পারেন। কচি শসা খোসাসহ খেলে আমাদের শরীরে তা অনেক উপকার করে। শসা খেলে ত্বক সুন্দর ও ভুড়ি কমাতে সাহায্য করে।
আবারও বলতে চাই, শুধু শসা খেয়ে ওজন কমাতে যাবেন না এতে করে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাসহ শসার ওপর বিরক্তি তৈরি হবে। ফলে এত ভাল এবং উপকারি সবজি খাওয়াটাই আপনার বন্ধ হয়ে যাবে। মোট কথা- ওজন কমাতে শুধু শসা নয়, সব খাবারই পরিমাণ মতো খেতে হবেশসার সঙ্গে। তাই শসা সঠিক নিয়মে খেলে আপনারই উপকার। তবে সারাদিন অন্য খাবার বাদ দিয়ে শুধু শসা খেলে হবেনা। শুধু শসাকে ‘না’ বলুন।
লিখেছেন – ফান্ডামেন্টাল শারীফ