You are currently viewing এই গরমে এসি ছাড়াও ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়

আমরা সাধারণত গ্রীষ্ম প্রধান দেশে বসবাস করি আর গরম কি রকমের পড়ে সেটা যারা এখানে থাকে তারাই জানে। এখন অবশ্য অনেকেই এই গরম থেকে বাঁচার জন্য AC লাগিয়ে নেন , কারণ এই AC কেনা অনেক সহজ হয়ে গেছে। বিভিন্ন দোকানে গেলেই ছাড় ও ইনস্টলমেন্টের সুবিধা পাওয়া যায়।

কিন্তু এমন অনেকে আছেন যারা AC কিনতে পারেন না বা পছন্দ করেননা। কারণ AC তে থাকা শরীর বা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভালো না। দীর্ঘ সময় এসির ঠাণ্ডায় থাকলে ত্বকের কমনীয়তা নষ্ট হয়ে হাত পা আর মুখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়।এছাড়া ত্বক, শ্বাসনালীতে সমস্যা, গলাব্যথা, মাথাব্যথাও হতে পারে।    

যাই হোক এই বিতর্কে না গিয়ে চলুন জেনে নি কি কি ঘরোয়া উপায়ে AC ছাড়াই ঘরকে ঠান্ডা রাখতে পারবো।

  1. ঘরে ভেন্টিলেটর থাকলে গরমকাল আসার আগেই সেটি ভালো করে পরিষ্কার করুন৷ এতে ঘরে বাতাস চলাচল বেশি হবে। আর বাতাস চলাচল যত বাড়বে, গরম তত কমবে।
  2. প্রয়োজন না হলে ঘরে আলো জ্বালিয়ে রাখবেন না। রাতেরবেলা ঘরে টিউব লাইট ব্যবহার করুন৷ সম্ভব হলে কম আলোর এলইডি বাল্ব ব্যবহার করুন।
  3. ঘরের জানলা কাঁচের হলে মোটা পর্দা ব্যবহার করুন। তবে পর্দার রং গাঢ় হওয়া চাই। কারণ, গরমে হালকা রঙের পর্দা তাপ আটকানোর ক্ষেত্রে মোটেই কার্যকরী নয়৷
  4. জানালার কাঁচের মধ্য দিয়ে সূর্যের তাপ শোষিত হয়ে ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে অনেকখানি। এসব ক্ষেত্রে যেসব জানালা সরাসরি সূর্যের আলোতে পড়ে সেসব জানালায় হিট প্রটেক্টিং উইন্ডো ফিল্ম লাগান। এতে করে জানালার ভিতর দিয়ে সূর্যের তাপ শোষণ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায় এবং ঘরও ঠাণ্ডা থাকে। জানালার কাঁচ গুলোয় সাদা রঙ করে দিন, কিংবা রোদ ঠেকাতে ব্যবহার করুন শেড। যদি দুটোর কোনটি করতে না চান, তাহলে এডিসিভ টেপ দিয়ে ধবধবে সাদা কাগজ সেঁটে দিন জানালার কাঁচে । দেখবেন ঘর অনেকটাই ঠাণ্ডা থাকছে।
  5. ঘরের মেঝে মোছার সময় জলের মধ্যে অল্প পরিমাণ লবণ গুলিয়ে নিন। লবণ- জলে মেঝে মুছলে ঘরের তাপমাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে৷
  6. ঠাণ্ডা জল বা বরফের টুকরো নিন একটি বাটি বা গামলায়। তারপর তা রেখে দিন টেবিল বা স্ট্যান্ড ফ্যানের একদম সামনে। ব্যস, তৈরি আপনার বিদ্যুৎহীন এসি। টেবিল ফ্যান না থাকলে সিলিং ফ্যানের নিচে রাখলেও খারাপ হবে না। প্রাচীন কালে বাড়ি শীতল রাখতে বড় বড় মাটির পাত্র ভরে জল রাখা হতো প্রতিটি ঘরে। এটা সেই পদ্ধতিরই আধুনিক সংস্করণ।
  7. ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন। নজর রাখুন, ঘরে যেন খবরের কাগজ স্তূপাকৃত ভাবে না থাকে। সিল্কের জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলুন। মেঝেতে উলের কার্পেট পাতা থাকলে তুলে ফেলুন। কাচের পাত্রে বা পাথরের থালা অথবা বাটিতে জল ঢালুন। জল ভর্তি পাত্রে কিছু পাথর রাখুন। কিছু ফুল দিয়ে দিন। এবার যে দরজা বা জানলা দিয়ে সবচেয়ে বেশি হাওয়া আসে, তার সামনে রেখে দিন।
  8. রাতের বেলা টেবিল বা পোর্টেবল ফ্যানটি জানালার কাছে নিয়ে চালিয়ে দিন। এটি বাইরের ঠাণ্ডা হাওয়া ভিতরে নিয়ে আসবে এবং ঘরের অসহনীয় গরম দূর হবে।
  9. চাল ভর্তি বালিশ তৈরি করুন। চাল খুব ঠান্ডা থাকে। তাই গরমকালে চালের তৈরি বালিশ মাথায় দিতে পারেন। এতে চোখে-মুখে ঠান্ডার সতেজতা পাবেন। বালিশে চাল ভরার আগে এর মধ্যে কিছু নিমপাতা মিশিয়ে দিন। এতে চালে পোকা হবে না।
  10. বেশ কিছু ইন্ডোর প্লান্ট রয়েছে, যা বাড়ির মধ্যে রাখলে ঘর ঠান্ডা থাকে। যেমন অ্যালোভেরা, বস্টন ফার্ন, স্নেক প্লান্ট, উইপিং ফিগ, অ্যারিকা পাম ইত্যাদি। ঘরের বাতাসকেও শুদ্ধ করে। এই গাছগুলি ঘরের মধ্যে থাকা গরম বাতাস থেকে কার্বনডাই-অক্সাইড সংগ্রহ করে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া চালু রাখে। এতে ঘরের গরম বাতাস হাল্কা হয় এবং তাতে প্রচুর পরিমাণে জলকণা সঞ্চিত হয়। ফলে, ঘরে ঠান্ডা থাকে।

Leave a Reply