দাঁত নিয়ে আমরা বরাবরই উদাসীন। ইদানীং যদিও সচেতনতা বাড়ছে তবুও আমার ব্যক্তিগত ভাবে তা আশানুরূপ মনে হয়না। এখনো আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেনা যে,পার্মানেন্ট দাঁত একবার পড়ে গেলে বা ফেলে দিলে আর উঠে না। কারো কারো মতে দাঁত বারবার উঠে।
তবুও আজকাল দাঁত নিয়ে মানুষ ভালো ই সচেতন। এখনকার মা রা বাচ্চাদের দাঁত নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হলেও অনেকে ই জানেন না বাচ্চাদের দাঁতের সঠিক পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়। যার ফলে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ছুটতে হয় দাঁতের ডাক্তারের চেম্বারে আর মায়েদের common complain হলো,দাঁত ব্রাশ করানোর পর ও কেন বাচ্চার দাতে caries হচ্ছে!!!
এর প্রধান কারন হলো,আমরা সঠিকভাবে বাচ্চার দাঁতের যত্ন নিতে পারছি না। শিশুর দাঁত উঠা শুরু হয় তার ৬ মাস বয়স থেকে। সাধারণত ২ বছরের মধ্যে ই সব দুধ দাঁত (২০ টা) উঠে যায় যা আবার সাধারণত ৬-১৪ বছরের মধ্যে পার্মানেন্ট দাঁত দিয়ে replace হয়ে যায়। দুধ দাঁত পড়ে যায় দেখে অনেকে ই মনে করে দুধ দাঁত এর তেমন যত্নের প্রয়োজন নেই,অথচ দুধ দাঁতের পরিচর্যার উপর ই নির্ভর করে পার্মানেন্ট দাঁতের এলাইনমেন্ট।
দুধ দাঁতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা দেখা দেয় তা হলো ক্যারিজ…ক্যারিজ মুলত হয় খাদ্য কনা জমে তাতে বিদ্যমান ব্যাক্টেরিয়া থেকে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে sweetener(দুধে মিশ্রিত চিনি,চকলেট,যে কোন মিষ্টি জাতীয় খাবার) এবং দীর্ঘ সময় জমে থাকা খাদ্যকনা থেকে ক্যারিজ হতে পারে।
তাই ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে (৬ মাস-২ বছর), যারা breast/bottle feed করে ওদের মা দের বাচ্চাকে খাওয়ানো শেষে একটা ভেজা নরম কাপড় দিয়ে দাঁত ও মাড়ি মুছে দিতে হবে আর যে সব বাচ্চারা bottle feed করে তাদের feeding শেষে bottle -এ একটু পানি দিয়ে খাইয়ে দিতে হবে যাতে দাঁতে লেগে থাকা sweeteners ধুয়ে যায়। প্রতি বার করতে না পারলে ও ঘুমানোর আগে অবশ্য ই করতে হবে,কেননা ঘুমের এ দীর্ঘ সময়ে ব্যাক্টেরিয়া রা বেশি কর্মক্ষম থাকে।
এছাড়াও বাচ্চা একটু বড়ো হলে ই দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে,এক্ষেত্রে প্রথমে ই বাচ্চার উপর ব্রাশ করার দায়িত্ব না দিয়ে চেষ্টা করুন নিজে ব্রাশ করে দিতে,এটলিস্ট রাতে খাবার পরের ব্রাশ টা আপনি ই করে দিন।
৬ বছর বয়স থেকে দাঁত নড়ে পড়া শুরু করলে দাঁতের নড়া থেকে পড়া এবং নতুন দাঁত উঠা পর্যন্ত খেয়াল রাখুন,অনেক সময় জায়গা না পেয়ে পার্মানেন্ট দাঁত সামনে -পেছনে, উপরে – নিচে উঠতে পারে,ফলে আঁকাবাকা এলাইনমেন্ট হতে পারে।
আর সম্ভব হলে বাচ্চার ৩ বছর বয়স থেকে ৬ মাস পরপর বাচ্চাকে ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যেতে পারেন,এতে বাচ্চা এবং তার ডেন্টিস্টের সাথে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে যা পরবর্তীতে ভীতিমুক্ত ভাবে যে কোন দাঁতের চিকিৎসায় সাহায্য করবে।
ডা. সামিনা আজাদ (ডেন্টাল সার্জন)
বি.ডি.এস
পি.জি.টি(ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারী)