বিয়ের কয়েকটি মুহূর্ত সারা জীবনের শ্রেষ্ঠ গল্প হয়ে বেঁচে থাকে আজীবন। পরিবারের সবার মধ্যে নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু করতে যাওয়া তারা দু’জন যেন সবার কাছে বিশেষ কিছু। যত আয়োজন তাদের ঘিরে। যত ঘটনা তাদের নিয়ে। হলুদসন্ধ্যা, বিয়ের দিন, বউভাত_ সব দিনেই তারা যেন আলাদা বিশেষ মানুষ। সবার থেকে বিশেষ হতে হয় তাদের পোশাক, তাদের সাজ। কনের বেলায় তা যেন আরও কড়াকড়ি। বিয়ের কয়েক দিন আগে থেকেই নজর দিতে হয় রূপচর্চা এবং সাজসজ্জায়। মানতে হয় আনুষ্ঠানিকতার শেষ দিন পর্যন্ত। আর বিয়ের দিনে তো কথাই নেই। কনে হবে সবার চেয়ে আলাদা। পোশাক, গহনা, সাজেই যেন বউয়ের রেখা অঙ্কন করে দেয়। তাই বিয়ের গহনা কিনতে আজ কারুকর্ম দিচ্ছে আপনাদের কিছু টিপস
হাতে সময় রেখে
বিয়ের কিছু আগ সময়ে কনের গহনা বা কনের অলংকার না কিনে হাতে সময় থাকতেই কিনে ফেলুন । অনেক সময় দেখায় কেউ কেউ বিয়ের ২-৩ দিন আগে কিনছেন যা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয় । হাতে সময় পেলে কম পক্ষে ১৫ দিন আগেই কিনে ফেলুন । এর মাধ্যমে ধীর স্থির ভাবে আপনি সঠিক গহনা নির্বাচন করতে পারবেন, তাড়াহুড়ায় কোন কিছুই ভালো মতো করা যায় না। প্রয়োজনে বিভিন্ন গহনার দোকানে একদিন ঢু মারুন, পরের কোনদিন যেয়ে যে গহনা আপনার পারফেক্ট মনে হয়েছে কিনে নিয়ে আসুন, এতে আপনি সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যে কিছুটা সময় পাবেন। গহনা এমনিতেই দামি জিনিস। যদি তাড়াহুড়ো করে প্রথমেই যে গহনা পছন্দ হবে তা’ই কিনে ফেলেন, তাহলে ঠকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগে বিয়ের পোশাক
বিয়ের কেনাকাটা কিন্তু রীতিমত বিশাল। গহনা তো বটেই, এর সাথে সাথে বিয়ের পোশাক, আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র সবকিছু মিলিয়ে বিশাল এক শপিং-এর মহোৎসব শুরু হয়। অনেকেই এ-সময় কোনকিছু আগে থেকে প্লান না করে এলোপাথাড়িভাবে এটা ওটা কেনা শুরু করেন। এভাবে বিয়ের শপিং করা উচিত নয়। প্লান-মাফিক শপিং করলে সবকিছুই ঠিকমত ম্যাচিং করে কিনতে পারবেন। বিয়ের গহনা যতই দামি হোক না কেন, আপনার সৌন্দর্য কিন্তু ফুটিয়ে তুলবে বিয়ের পোশাকই। তাই পোশাকের সাথে ম্যাচ করে গহনা কেনা ভালো। আগে পোশাক কিনুন, এরপরই গহনার খোঁজ করুন।
এভারগ্রীন গহনা
বিয়ের অলংকার গুলো বেশ দামি হয় তাই বিয়ের গহনা কেনার সময় মাথায় রাখুন পরবর্তীতে যেন আপনি তা আবার ও ব্যাবহার করতে পারেন ।
বাজেট
বাজেট এবং সামর্থ্যের কথা মাথায় না রেখে বিয়ের গহনা কেনাকাটা কখনোই উচিত নয়। অনেকেই মনে করে থাকেন যে বিয়ের গহনা হচ্ছে তাদের আভিজাত্যের প্রতীক, এবং দামি গহনা না কিনলে বিয়েটা ঠিকমত হবে না। যদি আপনার সামর্থ্য থেকে থাকে, তাহলে চাইলে অবশ্যই দামি গহনা কিনুন। কিন্তু সামর্থ্য সেভাবে না থাকার পরও শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য দামি গহনা কিনলে বিয়ের পরবর্তী সময়ে বর-কনেকে সংসার শুরু করতে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া উচিত। শুধুমাত্র বিলাসিতা করার সামর্থ্য থাকলেই করুন, অন্যথায় অযথা খরচ বাড়ালে সমস্যা বাড়বে।
নির্ভরযোগ্য পরামর্শ নিন
কি ধরনের জুয়েলারী কিনবেন সে ব্যাপারে আপনার মা, হবু শাশুড়ী, বন্ধু-কাজিন বা আপনার কাছের কারো থেকে পরামর্শ নিতে পারেন, আপনি হয়তো মর্ডান ডিজাইন ভাবছেন কিন্তু আপনার শাশুড়ী বা মা চান আপনি কিছুটা ট্রাডিশনাল গহনা পরুন, তাহলে আপনি ক্ল্যাসিক্যাল স্টাইলের মডার্ন ভার্সন গহনার ডিজাইন বেছে নিন, আপনার আধুনিকতা এবং তাদের ট্রাডিশনাল ইচ্ছা দু্টাই পূরন হবে। তা ছাড়া আপনি ভিবিন্ন ব্লগের সাহায্য নিতে পারেন তাদের টিপস পরে আপনি হয়তো ভালো কোন আইডিয়া পেয়ে যেতে পারেন ।
মুখমণ্ডলের গড়ন অনুযায়ী গহনা কিনুন
আপনার মুখমণ্ডলের গড়ন অনুযায়ী গহনা কিনতে ভুলবেন না। গহনার ব্যাপারটাও অনেকটা পোশাকের মতই এক্ষেত্রে। সব সাইজের, সব ডিজাইনের পোশাকে যেমন আপনাকে ভালো দেখাবে না, তেমনি সব গহনাও আপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলবে না। তাই আপনার মুখমণ্ডলের গড়ন যে রকম, তার ওপর ভিত্তি করেই নেকলেস, কানের দুল, টিকলি ইত্যাদি বাছাই করুন।
সব ধরনের গহনা সবার চেহারার সাথে মানায় না, রাউন্ড বা গোল ফেসের জন্য নেকলাইন থেকে কিছুটা দীর্ঘ নেকলেস এবং লম্বা দুল ভালো লাগবে, ওভাল শেপ হলে সব ধরনের গহনাই ভালো লাগবে কারন এ ধরনের ফেস শেপ কে আদর্শ ফেস শেপ মনে করা হয় এবং এর ক্ষেত্রে সব ধরনের গহনাই ভালো লাগে। রেক্টেঙ্গুলার ফেস শেপের জন্য চোকার স্টাইল নেকলেস এবং গোল কানের দুল ভালো লাগবে। হার্ট শপ ফেসের জন্য ছোট কাটের নেকলেস এবং চোকারের সাথে ঝোলানো মুক্তা বা পাথর দেয়া নেকলেস ও মাঝারি দৈর্ঘ্যের কানের দুল ভালো লাগবে।
নেকলাইন স্মরণে রাখুন
আপনার ব্লাউজ বা লেহেঙ্গার নেকলাইন হিসেব করে গহনা বেছে নিন, যদি ডীপ নেকলাইন হয় তাহলে হেভী চোকার সেট বেছে নিন আর যদি হাই নেকলাইন হয় তাহলে লম্বা ঝুলের নেকলেস বেছে নিন।
হেয়ার স্টাইল
আপনি বিয়ের দিনের সাজে কেমন হেয়ার স্টাইলের ইচ্ছা রাখেন সেই অনুযায়ী কানের দুল কিনুন। যদি চুল নিচু করে বাধা থাকে তাহলে ঝুলানো কানের দুল পড়ুন আর যদি বান বা খোপা স্টাইলে চুল বাধেন তাহলে মিডিয়াম দৈর্ঘ্যের কানের দুল পড়ুন।